আইনগত সহায়তা ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি
বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় :
১৭-০৪-২০২৪ ০৫:৪৩:০১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৭-০৪-২০২৪ ০৫:৪৩:০১ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি
অধিকার বঞ্চিত গরীব অসহায় জনগণের জন্য আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে লিগ্যাল এইড বাংলাদেশ সরকারের এক যুগান্তকারী অধ্যায়। প্রতি বছর ২৮ এপ্রিল পালন করা হয় আইনগত সহায়তা দিবস। আইনগত সহায়তা বলতে ব্যাপক অর্থে আইনজীবীর ফি প্রদান করে, পরামর্শ অন্তর্ভূক্ত করে, সামাজিক ব্যবস্থা প্রসারিত করে দরিদ্র ও দুর্বল শ্রেণীর মানুষের আইনি প্রক্রিয়ায় বিশেষ সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে।
উক্ত সহায়তার বৃহদায়তন প্রয়োজনীয়তার নিমিত্তে কাজ করে থাকে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (আলটারনেটিভ ডিসপুট রিসলিউশন)। আমাদের দেশের নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালত পর্যন্ত অসংখ্য মামলা চলমান রয়েছে। প্রতিদিন যে হারে মামলা দায়ের হচ্ছে সে হারে মাস কিংবা বৎসরেও নিষ্পত্তি হচ্ছে না। ফলে বছরের পর বছর মামলা চালাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে যান অনেকেই। এর বড় কারণগুলোর একটি হচ্ছে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বা এডিআর সম্পর্কে ধারনা না থাকা। আবার মামলার ফলপ্রসূ নিষ্পত্তি হলেও বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে থেকে যায় শত্রুতা। মূলত এসব কারণে জনগণকে মামলার গ্রাস থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (আলটারনেটিভ ডিসপুট রিসলিউশন) ব্যবস্থা চালু করেছে সরকার।
বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (আলটারনেটিভ ডিসপুট রিসলিউশন) হলো এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে মধ্যস্থতাকারী ব্যক্তির উপস্থিতিতে বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায়। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (আলটারনেটিভ ডিসপুট রিসলিউশন) এর মাধ্যমে একটি মামলার নিষ্পত্তি হতে সময় লাগে ৩০, ৬০ কিংবা ৯০ দিন। আইনজীবীর ফি লাগে না বললেই চলে। এতে উভয় পক্ষই লাভবান হয়। বর্তমান সময়ে সরকারের এই আইনি সহায়তা থেকে সুফল পাচ্ছে জনগণ।
২০১৭ সালের জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল 'বিরোধ হলে শুধু মামলা নয়, লিগ্যাল এইড অফিসে আপসও হয়'। যদি কোন ব্যক্তি তার মামলা আপস মীমাংসার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে চান তাহলে তিনি জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের শরনাপন্ন হতে পারেন। সেখানে দ্রুত সময়ের মধ্যে তার চলমান বিরোধ কিংবা মামলা নিষ্পত্তির নিমিত্তে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন দায়িত্বে থাকা বিচারক (সিনিয়র সহকারী জজ)। ২০১৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি আইনি পরামর্শ ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বিধান প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়। এরপর থেকে প্রত্যেক জেলার জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ২০১৫ জুলাই মাস থেকে জেলা পর্যায়ে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (আলটারনেটিভ ডিসপুট রিসলিউশন) এর প্রয়োগ শুরু করেন।
একজন সিনিয়র সহকারী জজ পদ মর্যাদার কর্মকর্তা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার হিসাবে প্রি কেইস অর্থাৎ মামলা পূর্ব বিরোধ এবং চলমান মামলা সমূহ মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকেন। দেওয়ানি কার্যবিধি ১৯০৮ এর ৮৯-এ ধারা সংশোধন করে মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির জন্য আদালত থেকে লিগ্যাল এইড অফিসারের কাছে মামলা পাঠানের ক্ষমতা প্রদান করা হয় ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর।
জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার প্রি কেইস অর্থাৎ আপসযোগ্য বিরোধ ও প্রেরণকৃত মামলা সমূহ মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করে আসছেন। দরিদ্র, অসচ্ছল শ্রেণীর মানুষের আইনি সহায়তার লক্ষ্যে, বিনা খরচে আইনি সেবা পাওয়া, মামলা পূর্ববর্তী কিংবা চলমান মামলার বিরোধ নিষ্পত্তির নিমিত্তে বাংলাদেশের সকল জেলায় নিরলস ভাবে সেবা প্রদান করে যাচ্ছে লিগ্যাল এইড। লিগ্যাল এইডের সেবা পেতে ১৬৪৩০ নম্বরে ডায়াল অথবা সকল জজ কোর্টের অভ্যন্তরে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে যোগাযোগ করতে পারনে আগ্রহীরা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin
কমেন্ট বক্স